আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক ভাই ও বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো পাবনা জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত, এবং তাছাড়া পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থান, এবং আরো জানবো পাবনা জেলার কিছু নামকরা নাম করা খাবারের নাম। আমরা হয়তো অনেকেই জানি যে পাবনা জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত, আবার অনেকে পাবনা সম্পর্কে না জেনে থাকতে পারি চলুন সম্পূর্ণ আলোচনা করি ।
সূচি পত্র দেখুন
পাবনা জেলার ১৫টি বিখ্যাত বা দর্শনীয় স্থান:
১.ঈশ্বরদী বিমানবন্দর
২.ভাঁড়ারা শাহী মসজিদ
৩.তাড়াশ বিল্ডিং
৪.জোড় বাংলা মন্দির
৫.ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়ী
৬.অনুকূল ঠাকুর টেম্পল
৭.চলনবিলের সূর্যাস্ত
৮.লালন শাহ সেতু
৯.কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট
১০.গাজনার বিল
১১. পাকসি হাডিং ব্রিজ
১২. রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প
১৩ . ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন
১৪. পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ
১৫. পাবনা মানসিক হাসপাতাল
পাবনা জেলার আয়তন
পাবনা আমাদের দেশের রাজশাহী বিভাগের একটি অঞ্চল, আয়তনের দিক দিয়ে এ জেলাটি প্রায় ২৩৭১.৫০ বর্গ কিমি। পাবনা জেলাটির পশ্চিম দিকে অবস্থিত নাটোর জেলা, পূর্ব দিকে রয়েছে যমুনা নদী, দক্ষিণ দিকে রয়েছে পদ্মা নদী, উত্তরে রয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা।
পাবনা জেলার কিছু নামকরা খাবার
পাবনা জেলা ঘি, সন্দেশ , দই , প্যারডাইস সুইটস্ এর প্যারা( প্যারা একটি মিষ্টির নাম ) বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে। যার কারণে পাবনা জেলা বিখ্যাত সারা বাংলাদেশ জুরে।
এই জেলার খাবারের তালিকায় স্থান করে নেয়া কিছু খাবার সারাদেশ ব্যাপী সমাদৃত। তার মাঝে পাবনা জেলা ঘি, সন্দেশ , দই , প্যারডাইস সুইটস্ এর প্যারা(প্যারা একটি মিষ্টির নাম) বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে।
প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারা এই জেলার মানুষ যেমন আতিথিয়েতায় পটু ঠিক তেমনই সব রকম পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতেও স্বাচ্ছন্দবোধ করে।
পাবনা জেলার মানুষের আচরণ বিধি কেমন
পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া সকল স্মৃতীর প্রতি সম্মান প্রর্দশনে এদের কোন জুড়ি নেই। নেই পরিকল্পিত জীবনযাপনের অনিচ্ছা। সদা হাস্যোজ্বল, পরোপকারী আর সরলতায় ভরপুর এই অঞ্চলের মানুষেরা শুধু জেলা কেন্দ্রিক নয় দেশের সকল জেলাতে যে কোন পরিবেশে নিজের যোগ্যতা প্রমানে পারদর্শি।
তাঁত শিল্পে পাবনা জেলার অবদান
তাঁত শিল্পেও এই জেলার বেশ অর্জন। দেশে হস্তচালিত তাঁতশিল্প মুখ থুবড়ে পড়লেও পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অর্ন্তগত আতাইকুলার তাঁত শিল্প এখান টিকে আছে। যার কারনেই পাবনা জেলার চাদর, লুঙ্গি ও গামছার কদর সারাদেশব্যাপী।
পাবনা জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে এবং পাবনা জেলার সকল উপজেলার নাম জেলার নাম
পাবনা জেলাটি ৯ টি উপজেলায় বিভক্ত হলেও বোঝার উপায় নেই যে কোন উপজেলার বাসিন্দা। কথার ধাচ আর পোশাকে এই জেলার সকল উপজেলার মানুষকে একই মনে হয়। কথায় কিছুটা টান বোঝা যায় নদী উপকূলীয় মানুষের মাঝে।
পাবনা জেলার ৯ টি উপজেলা
১.আটঘরিয়া উপজেলা
২.ঈশ্বরদী উপজেলা
৩.চাটমোহর উপজেলা
৪.পাবনা সদর উপজেলা
৫.ফরিদপুর উপজেলা
৬.বেড়া উপজেলা
৭.ভাঙ্গুড়া উপজেলা
৮.সাঁথিয়া উপজেলা
৯.সুজানগর উপজেলা
পাবনা জেলার বিখ্যাত হওয়ার ইতিহাস ইতিহাস
পাবনা জেলা টি সদর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর। পাবনা জেলা টি বেশিরভাগ অংশ রাজশাহী জেলার অধীনে হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। সেই সময়ে এইসব এলাকাগুলোতে সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারীদের খুব সংকট দেখা দিয়েছিল।
ডাকাতদের ঘটনা তথ্য গোপন রাখা এবং এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল পুলিশের অযোগ্যতা এবং জমিদারদের পক্ষ থেকে। ডাকাতরা দলে দলে গ্রাম অঞ্চল গুলোতে ঘুরে বেড়াতো। দীর্ঘদিন ধরে জলদস্যুদের উপদ্রব চলনবিল এলাকায় চলত।১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে জলদস্যুদের প্রতিরোধ করার জন্য এবং শাসনতান্ত্রিক সুবন্দোবস্ত জন্য কোম্পানি সরকারের মন্তব্য অনুযায়ী পাবনায় সামগ্রিকভাবে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছিল।জয়েন ম্যাজিস্ট্রেট ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে স্থায়ী রূপ লাভ করেছিলেন এবং তাকে স্বতন্ত্র ডেপুটি কালেক্টর নিয়োগ করেছিলেন। সর্বপ্রথম পাবনা জেলাতে গঠিত হয়েছিল রাজশাহী জেলার পাঁচটি থানা এবং যশোর জেলার তিনটি থানা নিয়ে। দিনে দিনে এই এলাকা ও সীমানা পরিবর্তন ঘটেছিল। যশোরের খোকসা থানা টি পাবনায় ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ২১ নভেম্বর ভুক্ত করা হয়েছিল। অন্যান্য থানা গুলির মধ্যে ছিল মথুরা, রায়গঞ্জ, রাজশাহীর খেতুপাড়া, শাহজাদপুর ও পাবনা। আর যশোরের চারটি থানার মধ্যে মধুপুর, পাংশা, ধরমপুর ও কুষ্টিয়া রয়েছে। তখন পাবনা জেলায় পশ্চিমবাংলার মালদহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ ডব্লিউ নিলসেন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল।
পাবনা জেলা ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সেশন জজের পদ সৃষ্টি হলে রাজশাহীর দায়রা জজ এর অধীনে যায়। পাবনা জেলা পূর্ব সীমান্ত নির্দিষ্ট করা হয়েছিল ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর যমুনা নদীতে। সিরাজগঞ্জ থানাকে ১২ জানুয়ারি ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মোমেনশাহী জেলা থেকে বাদ দিয়ে মহাকুমা উন্নতি করে পাবনায় ভুক্ত করেছিল ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে। ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করা হয়েছিল। পাবনা জেলায় ২০ বছর পর রায়গঞ্জ থানা একত্রিত হয়। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে পাবনা জেলার নীল বিদ্রোহ চলাকালীন শান্তি-শৃঙ্খলা অবনতির হলে লর্ড ক্যানিং একজন কালেক্টর নিযুক্ত করেছিলেন। পাবনা জেলাতে এর আগে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে টি.ই. রেভেন্স জেলাপ্রশাসক হয়ে আসেন। মিউনিসিপ্যালিটি পাবনায় গঠিত হয়েছিল ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে এবং সিরাজগঞ্জে গঠিত হয়েছিল ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে। জেলা বোর্ড ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে পরিবর্তন করা হয়েছিল। ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে যখন পাবনা জেলা কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে তখন স্বভাবতই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী মহারানী ডিক্টোরিয়ার শাসনাধীনে চলে যায়।
পাংশা, খোকসা ও বালিয়াকান্দি এই তিনটি থানা নিয়ে পাবনার অধীনে কুমারখালী মহাকুমা ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে গঠন করা হয়েছিল। কুষ্টিয়া থানা টি পাবনা জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীয়া জেলার ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। পাংশা থানা ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমা ও কুমারখালী থানা কুষ্টিয়া মহাকুমার সাথে ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে সংযুক্ত করা হয়েছিল। পাবনা জেলা টি এইভাবে পদ্মা নদীর সীমান্ত হয়েছিল। কুমারখালী থানা যখন ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সৃষ্টি হয়েছিল তখন পাবনার একটি মহাকুমা ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে সৃষ্টি হয়েছিল। মহাকুমা অবলুপ্ত করে ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া মহাকুমার অংশ করা হয়েছিল। জজ আদালত ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কয়েকটি থানা এর আগে বদলে গিয়েছিল।