হার্ট অ্যাটাক কি? হার্ট অ্যাটাক কাকে বলে? হার্ট অ্যাটাক হলে করনীয় ও লক্ষণ গুলো কি কি?

হার্ট অ্যাটাক কাকে বলে 

বিশ্বের মানুষের মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ গুলোর মধ্যে একটি হল হার্ট অ্যাটাক। হৃদপিণ্ডের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন প্রবাহিত না হতে পারলেই বা কোন কারণে বাঁধার সৃষ্টি হলে হার্ট অ্যাটাক হয়। হৃদপিণ্ডের করোনারি ধমনি কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে হৃদপেশির রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে যে রোগ সৃষ্টি হয় মুলত তাকেই হার্ট অ্যাটাক বলে।

হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাক কেন হয়

মানুষের হৃদপিণ্ডে যে রক্ত চলাচল হয়, তা হৃদযন্ত্রে রক্ত আসে ধমনী দিয়ে। সেটি যখন ক্ষীণ হয়ে যায়, তখন নালীতে যদি কোন কারণে  রক্ত জমাট বেধে যায় তাহলে, নালীর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রের পেশীগুলো দুর্বল হয়ে যায়, ফলে আর সে অক্সিজেন চলাচল করতে পারে না। হৃদপিণ্ডের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন চলাচল হতে না পারলে হার্ট অ্যাটাক হয়।

হার্ট অ্যাটাক হলে করনীয়

হার্ট অ্যাটাক হবার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ট ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়া রুগীর চিকিৎসা পেতে ৬০মিনিট দেরির জন্য মৃত্যুর হার বেড়ে যায় ১০ শতাংশ।

হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহস দিতে হবে।হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বুঝতে পারলে তখনি এসপিরিন বা ওয়ারফেরিন ফর্মূলার ওষুধ খাওয়ানোর নির্দেশ দিয়ে থাকে চিকিৎসক।  এই জাতীয় ওষুধে খাওলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারবেনা। নাইট্রোগ্লিসারিন  জিহবার নিচের অংশে স্প্রে করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক করলে রোগীকে তাৎক্ষণিক-ভাবে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কোন অবস্থায় সময় নষ্ট করা যাবে না। 

হার্ট অ্যাটাক করলে রোগীকে নরম জায়গায় রাখা যাবেনা। সাথে সাথে শক্ত জায়গায় হাত-পা ছড়িয়ে শুইয়ে রাখতে হবে এবং গায়ের জামা-কাপড় ঢিলেঢালা করে দিতে হবে।

 হার্ট অ্যাটাক করলে রোগীর যাতে কোন অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কোন কারণে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দ্রুত  কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালুর চেষ্টা করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক রোগীর যদি বমি আসে তাহলে তাৎক্ষণিক তাকে একদিকে কাত করে দিতে হবে। রোগী যেন সহজেই বমি করতে পারে। এতে ফুসফুসের বমি ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। 

হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের প্রাথমিক উপসর্গ:

চিকিৎসকেরা বলছেনঃ শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, বুকে ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে ব্যথা হয়। অথবা অজ্ঞান হয়ে যাবার মত ঘটনা সাধারণ হার্ট অ্যাটাকের এক মাস আগে হয়ে থাকে। বুকের এক পাশে বা পুরো বুক জুড়ে ভারী ব্যথা শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা মনে হতে পারে ব্যথা শরীরে এক অংশ থেকে অংশে চলে যাচ্ছে, অনেক সময় বুক থেকে হাতে বেথা হতে পারে। সাধারণত বাম হাতে ব্যথা হয়, কিন্তু দুই হাতেই ব্যথা হতে পারে। বেশিরভাগ সময় বুকে ব্যথা খুবই তীব্র হয়। মনে হয় বুকে ভারী কিছু রাখা হয়েছে, বুকের ভিতর জ্বালা-পোড়া হওয়া, হৃদপিন্ডের স্পন্দন হঠাত করে বেরে যায়। অনেক সময় শরীরের অন্য অংশে ব্যথা অনেক রোগী  টের পায় না। এমনও দেখা যায় বিশেষ করে নারী, বয়স্ক মানুষ এবং যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন রোগীর ক্ষেত্রে হয়ত বুকে ব্যথা অনুভব করেননি।হার্ট অ্যাটাকের পূর্বে যেসব উপসর্গ দেখা যায়। যেমনঃ

  • বুকে ব্যথা বা চাপ চাপ ব্যথা অনুভব করা।
  • বুকের ভিতর জ্বালা-পোড়া হওয়া।
  • বসা, শোয়া অবস্থায়ও ব্যথা হওয়া।
  • মাথা ঘোরা বা ঝিমঝিম করা।
  • বিনা কারণে অস্থির লাগা।
  • বুক ধড়ফড় করা।
  • শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা।
  • বমি বমি ভাব হওয়া।
  • সর্দি অথবা কাশি হওয়া।

Leave a Comment